ইসলামে প্রতিবেশীর হক
ইসলামে প্রতিবেশীর হকের গুরুত্ব অপরিসীম। কুরআন ও হাদিসে প্রতিবেশীর অধিকার সম্পর্কে অনেক আলোচনা করা হয়েছে। একজন মুসলিমের জন্য প্রতিবেশীর হক জানা এবং তা পালন করা অত্যন্ত জরুরি।
কুরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেন:
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং কোন কিছুকে তাঁর শরীক করো না। আর পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকটবর্তী প্রতিবেশী ও দূরবর্তী প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার কর।” (সূরা নিসা, আয়াত ৩৬)
এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এখানে “নিকটবর্তী প্রতিবেশী” এবং “দূরবর্তী প্রতিবেশী” উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।” (বুখারী ও মুসলিম)
অন্যত্র তিনি বলেন:
“সেই ব্যক্তি মুমিন নয়, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ নয়।” (বুখারী ও মুসলিম)
এই হাদিসগুলো থেকে প্রতিবেশীর হকের গুরুত্ব স্পষ্ট হয়। প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করা, তাদের কষ্ট না দেওয়া এবং তাদের প্রয়োজনে সাহায্য করা একজন মুমিনের দায়িত্ব।
প্রতিবেশীর কিছু সাধারণ হক:
সালাম ও কুশল বিনিময়: প্রতিবেশীর সাথে দেখা হলে সালাম দেওয়া এবং তাদের কুশল জিজ্ঞাসা করা।
খবর নেওয়া: প্রতিবেশীর অসুস্থ হলে বা কোন সমস্যা হলে তাদের খবর নেওয়া এবং তাদের সাহায্য করা।
উপহার দেওয়া: বিভিন্ন উপলক্ষে প্রতিবেশীকে উপহার দেওয়া।
সাহায্য করা: প্রতিবেশীর প্রয়োজনে তাদের সাহায্য করা, যেমন – আর্থিক সাহায্য, খাদ্য সাহায্য ইত্যাদি।
ক্ষমা করা: প্রতিবেশী কোন ভুল করলে তাকে ক্ষমা করা।
দোয়া করা: প্রতিবেশীর জন্য দোয়া করা।
প্রতিবেশীর হক শুধুমাত্র মুসলিম প্রতিবেশীর জন্য নয়, বরং অমুসলিম প্রতিবেশীর সাথেও ভালো ব্যবহার করতে হবে।
ইসলামে প্রতিবেশীর হকের গুরুত্ব এত বেশি যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“জিবরাঈল (আঃ) আমাকে প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে এত বেশি উপদেশ দিয়েছেন যে, আমার মনে হয়েছিল হয়ত তিনি প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
অতএব, আমাদের সকলের উচিত প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে জানা এবং তা যথাযথভাবে পালন করা।
সর্বশেষ সম্পাদনা: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫ ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন